Skip to main content

বুদ্ধিবর্ধক কাঁঠালপাতার কদর বেড়েছে


হে কাঁঠালপাতা

|| কাজী জহিরুল ইসলাম || 

 

শুধু দামই বাড়েনিবেড়েছে কদরও।

 

এর আগে এক শ্রেণির বিশেষ প্রাণী শুধু এর গ্রাহক ছিল

এখন মনুষ্যসমাজের সবচেয়ে উঁচু স্তরের লোকেরা

এর মাহাত্ম জেনে ফেলেছে এবং

তাদের খাদ্য তালিকায় কাঁঠালপাতা হয়ে উঠেছে অবধারিত।

 

জাতির মেধাবী সন্তানেরাযারা জাতির বিবেক বলেই পরিচিত

স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছে ক্রমশ 

কেননা তাদের দীর্ঘজীবন একটি জাতির সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত।

বীর্যবান পুত্রদের খাদ্য-তালিকা সমৃদ্ধ আজ তৃণপত্রেবিশেষ করে 

বুদ্ধিবর্ধক কাঁঠালপত্রের কদর এখন সবচেয়ে বেশি।

যে কারণে নগরীর অভিজাত বাজারগুলোতে

গড়ে উঠেছে নতুন নতুন দোকান

অধিক মুনাফার আশায় কৃষকেরাফলের জন্যে নয় পাতার জন্যে

তাদের ধানি জমিগুলোতে ব্যাপকহারে 

হাইব্রিড কাঁঠালগাছের চাষ শুরু করেছে।

 

রক্তে অধিক মেদ এবং শর্করা বুদ্ধিজীবীদের কবে না ছিল

কিন্তু এই ঔষধিপত্রের সন্ধান ছিল অজানা।

 

শহরের অভিজাত ডানিং টেবিলের সুসজ্জিত

মেন্যুতে এখন শুধু যে তাজা কাঁঠালপাতা পরিবেশিত হয় তাই নয়

কাঁঠালপাতার জুসসুস্বাদু ভর্তাএমন কি শুকনো পাতা গুড়ো করেও 

ভাতের ওপর ছিটিয়ে সেবন করছেন প্রাজ্ঞ বুদ্ধিজীবীগণ।

 

কিশোর-তরুণ হকারদের দেখা যায়

ফেব্রুয়ারি মাসে টিএসসি এবং দোয়েল চত্বরের সামনে 

ফুলের মতো তোড়া বানিয়ে ফেরি করছে

ঘন-সবুজ কাঁঠালপাতা।

 

দরিদ্র লেখক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীরা

কিছুটা সুলভে পাওয়া কাঁঠালপাতার ওপর এ-সময়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন।

 

হলিসউডনিউইয়র্ক। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

Comments

  1. এজন্যই আমাদের কাঁঠাল গাছ গুলো এখন পত্রশূন্য প্রায়। পাতার অভাবে ছাগলগুলো দিনে দিনে শুকিয়ে যাচ্ছে।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

অসাধারণ এই শিল্পীর জীবনের গল্প বড় করুণ

  [এই সময়ের অত্যন্ত প্রতিভাবান শিল্পী সারফুদ্দিন আহমেদ। বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে। আর্ট কলেজে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন ,  আর শুধু ছবি আঁকেন। নানান মাধ্যমে ,  নানান বিষয়ের ছবি। সারফুদ্দিন আহমেদের ছবি থেকে চোখ ফেরানো যায় না ,  আপনাতেই ওঁর নান্দনিক সৃষ্টিকর্মে দৃষ্টি আটকে যায় ,  কী জল রঙ ,  কী অ্যাক্রিলিক ,  কিংবা স্রেফ পেন্সিলের ড্রয়িং। এই গুণী শিল্পীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কবি কাজী জহিরুল ইসলাম। সাক্ষাৎকারটি এখানে উপস্থাপন করা হলো।]       ভারত আমাকে চোখ দিয়েছে ,  বাংলাদেশ দিয়েছে দৃষ্টি -     সারফুদ্দিন আহমেদ     কাজী জহিরুল ইসলামঃ  ব্যাক গ্রাউন্ডে তবলা বাজছে আপনি ছবি আঁকছেন কাচের ওপর।    এই যে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে ছবি আঁকা, এই ছন্দটা ছবিতে কিভাবে ধরেন? আর কোনো শিল্পী ছবি  আঁ কার সময় যন্ত্রানুসঙ্গ ব্যবহার করেছেন?   সারফুদ্দিন আহমেদঃ   কাঁচ নয়,   এটি এক বিশেষ ধরনের কাপড়-নেট। এই নেটের উপরে বর্তমানে আমার এক্সপেরিমেন্ট চলছে।    জহিরুলঃ ও ,  ফেইসবুকে যখন ছবিটি দেখি কাচের মতো ...

কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতা || আবুল কাইয়ুম

কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতা: জাতীয়-বৈশ্বিক মেলবন্ধন   || আবুল কাইয়ুম ||    কবি যদি হন বিশ্বপরিব্রাজক ,  তবে তিনি তো কবিতায় আঁকবেন তাঁর দেখা দুনিয়ার ছবি। বৃহত্ত্বকে আশ্লেষ করার পরিণামে স্বাভাবিকভাবে তাঁর মধ্যে জন্ম নেবে মানবিক মহত্ত্ববোধ ,  তা যে কাব্যাদর্শের লাঠিতে ভর করেই হোক। আশির দশক থেকে ক্রমবিকশিত কবি কাজী জহিরুল ইসলামের ক্ষেত্রেও একথা সত্যি । পর্যাপ্ত বিশ্বভ্রমণের অভিজ্ঞতায় আলোকিত হয়েছেন বলেই তিনি যে কোনো সঙ্কীর্ণতার উর্ধ্বে থেকে নিজেকে উদারনৈতিক মানবিক চৈতন্যে সংগঠিত করতে পেরেছেন ,  বিশ্বমানবতা ও বিশ্বশান্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত রেখেছেন। তাঁর ব্যক্তিত্বে জড়ো হয়েছে বৃহত্তর সমষ্টিচেতনা ,  তাঁর প্রেম ও প্রার্থনা মানব কল্যাণের আশ্রয়ে গড়ে উঠেছে। তার লেখনীতে নানা দেশের মানুষের জীবন ,  সংস্কৃতি ,  প্রেম ,  ত্যাগ ও সংগ্রামের চালচিত্র কীভাবে উঠে এসেছে তা তাঁর কবিতার সংস্পর্শে না এলে বোঝা যাবে না। তাঁর  ‘ এল সালভাদর ’  শীর্ষক কবিতার কথাই ধরা যাক। এই অত্যুজ্জ্বল কবিতার মাত্র কয়টি বিস্ময়কর পংক্তিই শুধু এখানে তুলে ধরছি-    হণ্ডু...

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জুর সাক্ষাৎকার || পর্ব ৭

মতিউর রহমান চৌধুরীকে  র‍্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারের জন্য নমিনেট করেছিলেন  আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু       [লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জুর সাক্ষাৎকারের সপ্তম  পর্ব আজ প্রকাশ করা হলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কবি কাজী জহিরুল ইসলাম।]          জহিরুলঃ  আপনার সাংবাদিকতা জীবনের প্রায় পুরোটাই ব্যয় করেছেন জাতীয় সংসদ কভার করে। এই সংসদে আমাদের সংবিধানের অনেকগুলো সংশোধনী পাশ হয়েছে। আমাদের নেতারা সব সময় বলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড় কিন্তু প্রকৃত চিত্র হচ্ছে দেশের চেয়ে দলের স্বার্থ বড় হয়ে ওঠে এবং দলের চেয়ে ব্যক্তির/পরিবারের স্বার্থই বেশি গুরুত্ব পায়। প্রধান প্রধান সংশোধনীগুলোর আলোকে যদি বিশ্লেষণ করেন কতোটা জাতীয় স্বার্থে আর কতটা ব্যক্তি বা পরিবারের স্বার্থে এইসব সংশোধনীগুলো করা হয়েছে।    মঞ্জুঃ   আপনি ঠিকই বলেছেন, এযাবত বাংলাদেশে ১১টি জাতীয় সংসদ গঠিত হয়েছে এবং এর মধ্যে দ্বিতীয় সংসদ থেকে নবম সংসদ পর্যন্ত মোট আটটি সংসদের অধিবেশন কভার করা সুযোগ হয়েছে আমার। আমার সংসদ কভারের সময়ে আমাদের সংবিধানের ১০টি সংশোধনী অনুমো...